নারায়ণগঞ্জ এনসিপির নিয়ন্ত্রন আওয়ামীলীগের হাতে
আপডেট সময় :
২০২৫-০৯-১২ ২০:৫২:৪৪
নারায়ণগঞ্জ এনসিপির নিয়ন্ত্রন আওয়ামীলীগের হাতে
জেলার দায়িত্বপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে রয়েছে মাদক ব্যবসা, চাদাবাজী ও ক্যাসিনো ব্যবসায়ী সেলিম প্রধান সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ। কোরামবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে দল ছাড়ার হিরিক।
জুলাই অভ্যুত্থানের মাঝে গড়ে উঠা তরুনদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি তথা এনসিপির নিয়ন্ত্রনে রয়েছে, বর্তমানে আওয়ামী লীগের একাংশ। অন্যান্য জেলায় ভিন্ন পরিস্থিতি থাকলেও নারায়নগঞ্জ এ দেখা যাচ্ছে আজব এক চরিত্র। সম্প্রতি অনলাইন ক্যাসিনো ব্যবসায়ী সেলিম প্রধান গ্রেফতার হবার পর এর সাথে এনসিপির কয়েকজন নেতার সম্পর্ক উঠে এসেছে কারন সেলিম প্রধান নিজেই মাদক মাফিয়া এবং আন্তর্জাতিক ক্যাসিনো ব্যবসার সাথে জড়িত, তাই তাদের ও সংশ্লিষ্টতা এখন অভিযোগের তীর তাদের দিকে।
নারায়ণগঞ্জ এনসিপির দায়িত্বে মুলত আব্দুল্লাহ আল আমিন নামক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাবেক ছাত্র নেতা থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীক রাজনীতি করায় এবং কেন্দ্র নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকায় এবং হামলা মামলা সহ নানা নির্যাতনের কারনে ঘরছাড়া থাকায় তেমন পরিচিতি না থাকার কারনে বর্তমানে সাবেক বামপন্থী যারা বিভিন্ন সময় নারায়নগঞ্জ এর সাবেক মেয়র আইভির পদলেহন করে সাংষ্কৃতিক অংগনটি বেচে ছিল মুলত তারাই নিয়ন্ত্রন করছে এনসিপি।
আহমেদুর রহমান তনু, পেশায় ছিলেন, মঞ্চ নাটকের অভিনেতা, করতেন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাফায়েত সানীর সাথে ঐকিক থিয়েটার। নাটক এ কাজ করাকালীন ই তার মাদক এর সাথে পরিচয় হয় এবং অত্যাধিক মাদক গ্রহনের দরুন সে বছর দুই আগে এই কম বয়সে হার্ট এটাক ও করেন।
কোনরকম ব্যবসায় জড়িত থাকার প্রমান না থাকলেও শোনা যায় জেলা সমন্বয়ক আব্দুল্লাহ আল আমিন এর রিকোয়েস্ট এ এনসিপির এক কেন্দ্রীয় নেতার ফোনে এনসিপির কোটায় বনে গেছেন ব্যবসায়ী নেতা, তার বেয়াদবী আচার আচরন এবংঅব্যবসায়ীক মনোভাবের কারনে সবাই বিরক্ত এবং সাধারন ব্যবসায়ীরা হতাশ।
এমনকি কিছু ব্যবসায়ী তার বিগত বছরগুলির ট্যাক্স ফাইল দেখতে চাইলেও সে উল্লেখযোগ্য কিছু দেখাতে পারেনি। ব্যবসায়ীদের মতে যে লোক নাটক আর চিত্রশীল্পের লোক সে আমাদের নেতা হয় কি করে৷ কাল যাকে দেখতাম অন্যের কোম্পানী তে চাকুরী করে, সারাদিন মেয়র আইভি থেকে কাজ বাগিয়ে কাজ করতে সে ব্যবসায়ী নেতা হয় কোন ক্যাটাগরিতে।
জানা গেল, বিগত বছরের কমিটিগুলির সবচেয়ে বেশি সুবিধা প্রাপ্ত দুই গুনধর ব্যবসায়ী- এমপি সেলিম ওসমান কোটা মোর্শেদ সারোয়ার সোহেল এবং মেয়র আইভির আত্মীয় কোটা,- ত্বকী হত্যাকারী আত্মীয় সোহেল আহমেদ সোহান তাদের অপকর্ম ঢাকতে এই চতুর লোক কে এখানে জায়গা দিয়েছে এবং মামলায় জরাবেনা এই নিশ্চয়তায় প্রচুর টাকা লেনদেনের বিনিময়ে এই নাট্যশিল্পীকে বিনা নির্বাচনে ব্যবসায়ী নেতা বানান।
৫ আগস্ট এর পর সর্বপ্রথম নির্বাচন না করার আওয়ামী ইতিহাস বলবত রাখে নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স।
আইভি গ্রেফতার এর দিন যাতে কোন প্রতিক্রিয়া না দেখাতে হয় ইচ্ছা করে তনু সেদিন কর্মসুচির নাম করে আগেই চলে যান ঢাকা, বরং আইভি গ্রেফতারে একটি নির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি তনুকে, কারন স্বরুপ তার সাথে আইভির সম্পর্কে কে দ্বায়ী করছেন সবাই, যার পরনাই বৈষম্যবিরোধীদের একটি অংশ তার উপর ক্ষুদ্ব ও বিরক্ত, অথচ আইভি গ্রেফতার এর কয়েকদিন আগেই আইভির বাসায় তার সাথে আলাপরত তাকে দেখা গেছে আইভির মৃত ভাই রিপনের চেহলাম এ।
তনু ক্ষমতার লোভে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির সাবেক এক এমপির মেয়েকে সন্তান সহ ২য় স্বামী হিসাবে বিবাহ করেন, এবং স্ত্রী বিএনপির পদধারী নেতা হওয়ায় এ পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ বিএনপির অন্যায় এর বিরুদ্ধেও একটি বক্তব্য রাখেন নি, নারায়ণগঞ্জ এনসিপির নেতারা কেউ কেউ কারন জিজ্ঞেস করলে বলেছেন এটাই লোকাল রাজনীতি আর আমার পায়ের নিচে মাটি শক্ত না।
এনসিপি মুজিববাদী বাকশালের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেও তার বাবা আব্দুর রহমান নিজেই ছিলেন, ঢাকা বিভাগের বাকশালের নেতা, পরবর্তীতে শেষ জীবনে আইভির সুবিধাভোগী হয়েই মৃত্যুবরন করেন।
তনুর আপন ভাই, ২৪ এর আন্দোলন নিয়ে প্রতিনিয়ত করছেন তামাশা, করছেন একের পর এক আপত্তিমুলক ফেসবুক পোস্ট, আওয়ামীপ্রীতি আর শেখ মুজিব বন্দনায় তার ফেসবুক সরগরম, শুধুমাত্র তনুর ভাই হবার কারনে কেউ ব্যবস্থা নিচ্ছেনা কিন্ত প্রমানাদি দলের সবার কাছেই রয়েছে।
তনু এনসিপির নামে সকল জায়গায় পদচারনা করে জোরপুর্বক প্রভাব এর চেষ্টা করলেও সফল হচ্ছেন না, তবে এনসিপিকে বিতর্কিত করতে যা যা লাগে উনি করে ফেলেছেন, তার নুন্যতম সাংগঠনিক অভিজ্ঞতা না থাকার ফলাফল এনসিপি নতুন দল হয়ে হারে হারে বুঝতে পারছে, এমন কি তার প্রচন্ড মাদকাসক্তির তথ্য ও গোয়েন্দা সংস্থার কাছে রয়েছে বলে জানা গেছে এবং জেলা সমন্বয় কমিটিতেও মাসদাইর এলাকায় মাদক ব্যবসা করে এমন কয়েকজন কে প্রবেশ করিয়েছেন বলে জানা গেছে।
এমনকি এ বছর ৫ আগস্ট গনঅভ্যুথান এর ১ বছর পুর্তিতে আতশবাজি করতে আসেন সম্পুর্ন মদ্যপ অবস্থায়, যার ছবি ভিডিও রয়েছে, যা নিয়ে শহরে কানাঘুষা হয়েছে। ওইদিন সকালে অভ্যুথান উপলক্ষে মিষ্টি বিতরন করতে দেখা গেছে আল আমিন এবং তনুকে, তারা দুইজন অইদিন শহরে প্রকাশ্যে অনলাইন ক্যাসিনো সম্রাট, শেখ হাসিনার আত্মীয় শেখ মারুফ এর পার্টনার ক্যাসিনো সেলিমকে মিষ্টি মুখ করাতে দেখা গেছে, জানা গেছে বিপুল পরিমান আর্থিক লেনদেন এর সুবিধা গ্রহন করা হয়েছে রুপগঞ্জে সেলিমকে স্পেস দিতে৷ সাধারন ভোটাররা এই অবক্ষয় এর কারনে ছি ছি করছে এনসিপিকে।
মুলত আলামীন সর্বেসর্বা হলেও কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে তাকে প্রচুর সময় দিতে হয় এবং নিজ নির্বাচনী এলাকায় বাকি সময় দেয়ায়, নারায়ণগঞ্জ এর রাজনীতিকে পুতুলখেলা বানিয়েছেন তনু আর তাকে ফ্রি হ্যান্ড দেবার পেছনে আলামীন এর সবচেয়ে বড় হাত জানা যাচ্ছে।আলামীন নিজেও চায়না এখানে ভাল কোন নেতৃত্বে উঠে আসুক বা তার প্রতীদ্বন্ধী হোক তাই সে পতিত আওয়ামীদের বেছে নিয়েছে।
কেদ্রীয় পদধারী আর এক নেতা বাসদের সাবেক বাম নেতা শওকত আলী, কোন ধরনের দুর্নীতি কিংবা আর্থিক লেনদেন এর অভিযোগ না থাকলেও তার বিরুদ্ধে সমকামিতার মত জঘন্য জিনিস সমর্থন দেবার অভিযোগ উঠেছে যা তিনি খন্ডাতে পারেন নি। অনুসন্ধানী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন তার এই বিষয়ে উত্থাপন করলেও এনসিপি তাকে শোকজ করার প্রয়োজন মনে করেন নি। তিনিও আইভির একনিষ্ঠ লোক বাসদের কাউন্সিলর অসিত বরন বিশ্বাসের লোক, তিনি নিজেও অসিতের কাউন্সিলর নির্বাচনের পোলিং এজেন্ট ছিলেন।
আল আমিন, তনু এবং শওকত এই তিনজনের কোরাম বাদে আন্দোলন এবং সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ অনেক কেই জায়গা দেয়া হয়নি, অনেক কে করে রাখা হয়েছে অবহেলিত। বৈষম্য বিরোধী কমিটি, যুবশক্তি, এনসিপি সব জায়গায় অযোগ্য ত্রিরত্নের সিন্ডিকেট ছাড়া কেউ জায়গা পায়নি, মনের কষ্টে কেউ কেউ চলে গেছে রাজনীতির বাইরে, কেউ বা অন্য দলে।
এনসিপির তৃনমুলের অনেক কর্মীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, আলামীন ভাইকে আমরা নেতা মেনে অন্ধ বিশ্বাস করেছিলাম কিন্ত তিনি এমন দুইজন অযোগ্য কে বসালেন নারায়নগঞ্জ এনসিপি ধংস হয়ে গেল।
আন্দোলনে না থাকা আহমেদুর রহমান তনুর অন্যায় আচরনের ফলে, আন্দোলনে সক্রিয় থাকা অনেকে তনুর জন্য করেছে, দল ত্যাগ৷ আর ও অর্ধ শতাধিক এর মত নেতাকর্মী দল ত্যাগ করার মানসিক প্রস্তুতি নিচ্ছে, আব্দুল্লাহ আল আমীন কে বারবার এনসিপি এবং বৈষম্যের তৃনমুল সব ঘটনা খুলে বলার পর ও তিনি সামান্য শোকজ পর্যন্ত করতে পারেনি এমন কি আলআমিন শৃংখলা কমিটির প্রধান হওয়ায় এনসিপিতে তাকেও প্রশ্নের আয়তায় আনা যাচ্ছেনা। তাদের বক্তব্য এনসিপিকে ব্যবহার করে তনুর সকল সুবিধা নেয়া শেষ, এখন তনু প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখছে তার বন্ধু সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি সাফায়েত সানী এবং
অন্যদিকে, আর এক বন্ধু এবং সম্বন্ধী স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা আবুল কাওসার আশার সাথে, যাতে যে কোন সময় পরিস্থিত চেঞ্জ হলে, এনসিপি হতে 'রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ" এ যোগ দিতে পারে।
শহরের ট্রাফিক সমস্যার সমাধানের নাম করে, বেশ কয়েকবার ব্যবসায়িক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান থেকে নিজ বলয়ের জন্য বিপুল অর্থ গ্রহন করে আত্মসাত করেছেন, মাদক গ্রহনের আধিক্যতার কারন্ব অল্পবয়সে তাকে হার্ট এটাক হলেও মাদক গ্রহন থেকে সে বের হতে পারেনি। এনসিপির ই বেশিরভাগ তার ডোপটেস্ট করার অনুরোধ জানিয়েছেন।
এবং লোকাল খবরের কাগজে তিনি নিজে নিজেকে এমপি প্রার্থী ঘোষনা করায় এলাকাবাসীসহ নিজ দলীয় লোকদের কাছেই হাস্যরসের পাত্র হয়েছেন, খোদ তার এলাকার লোকরাই বলছে তনুর আগে কাউন্সিলর হবার চেষ্টা করে দেখা উচিত জামানত থাকে কিনা তারপর সফল হলে এমপি প্রার্থী হওয়া দরকার। এমন কি ১৮ জুলাই সম্মেলনের দিন তিনি এ ও ছড়ান তার নমিনেশন কনফার্ম, কেন্দ্রীয় নেতারা আর্থিক লেনদেন এর মাধ্যমে তা কনফার্ম করে গেছেন গোপনে এরকম বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছেন তিনি।
নারায়ণগঞ্জ এর তরুন সমাজের মতে, যে মুজিববাদী আইভি ছাত্র হত্যার পক্ষে ছিল এবং ছাত্র হত্যায় সমর্থন দিয়েছে তারই ঘনিষ্ঠ জন বাকশালী পরিবারের নৈতিকস্থলন জনিত মানুষ এরকম একটি সম্ভাবনাময় দলের হাল ধরার চেষ্টা করলে এবং নারায়ণগঞ্জ এর মত অতি গুরুত্বপূর্ণ জেলা এবং ব্যবসায়ীক জোনের কাছে এনসিপি একটি মজার ঘটনা হয়ে থাকবে, কখনো সফল হবেনা।
অন্যন্য জেলায় এনসিপি সারা জাগাতে পারলেও নারায়ণগঞ্জ এর মত রাজনীতির খেলার মাঠে ভালো নেতৃত্বের অভাবে মুখ থুবরে পরেছে এনসিপি, ভাড়া করা লোক ছাড়া ১০ জন ডেকে আনার মত সম্ভাবনা দেখছে না কেউ। ত্যাগীরা চলে গেছে অসীম দূরে। আর কেউ কেউ এনসিপির নামে জুলাই বিক্রি করে বাতাসা খাচ্ছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin
কমেন্ট বক্স